বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপসমূহ
১) সেন্ট মার্টিন দ্বীপ
কক্সবাজার জেলার নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র সামুদ্রিক প্রবাল দ্বীপ হলো সেন্ট মার্টিন।টেকনাফ সমুদ্র উপকূল হতে ৯ কিঃমিঃ দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। দ্বীপটির আয়তন মাত্র ৮ কিঃমিঃ। এর অন্য নাম নারিকেল জিঞ্জিরা। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটন কেন্দ্র, মৎস আহোরণ, চুনাপাথর, খনিজ পদার্থ (কালো সোনা) প্রভৃতির জন্য প্রসিদ্ধ।
২) ছেঁড়া দ্বীপ
ছেঁড়া দ্বীপ কে পৃথক ভাবা হলেও এটি মূলত সেন্ট মার্টিন দ্বীপেরই অংশবিশেষ।এটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষিণাংশ।জোয়ারের সময় এটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভাটার সময় সেন্ট মার্টিন হতে পায়ে হেটে যাওয়া যায়। এটি বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিনের স্থান। এর আয়তন প্রায় ৩ কিঃ মিঃ।
৩) কুতুবদিয়া
কুতুবদিয়া দ্বীপে রাতে জাহাজ চলাচলের জন্য ব্রিটিশ আমলে নির্মিত বাতিঘর আছে। এটি কক্সবাজারে অবস্থিত।
৪) মহেশখালী
মহেশখালী বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ। বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল দ্বীপও এটি। আয়তন প্রায় ৩৬২ বর্গ কিঃমিঃ। মৌনাক পাহাড়ের চূড়ায় বিখ্যাত ‘আদিনাথ মন্দির’ এই দ্বীপে অবস্থিত।এটি কক্সবাজারে অবস্থিত।কক্সবাজার হতে এর দূরত্ব প্রায় ১২কি.মি.।
৫) সোনাদিয়া দ্বীপ
দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৯ বর্গ কিঃমিঃ। মৎস্য আহোরণ ও অথিতি পাখরি জন্য বিখ্যাত।এটি মূলত প্যারা দ্বীপ। এছাড়া এটা জীববৈচিত্রের দ্বীপ নামে পরিচিত। মৎস্য আহোরণ ও অথিতি পাখির জন্য বিখ্যাত।এই দ্বীপে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কথা ছিল।এটি কক্সবাজারের উত্তর -পশ্চিমে মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নে অবস্থিতএ দ্বীপকে যাযাবর পাখিদের জন্য ভূ-স্বর্গ বলা হয়।
৬) সন্দ্বীপ
সন্দ্বীপের আয়তন প্রায় ৭৬২ বর্গ কিঃমিঃ। প্রাচীনকালে এই দ্বীপে সামুদ্রিক জাহাজ তৈরি হতো।
৭) নিঝুম দ্বীপ
নিঝুম দ্বীপ নোয়াখালী জেলার মেঘনা নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরের হাতিয়া উপজেলার অর্ন্তগত। এটি হাতিয়া থেকে প্রায় ৯৭ কিঃমিঃ দক্ষিনে অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ৯১ (৩৫ বর্গ মাইল) বর্গ কিঃমিঃ। ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ে এ দ্বীপের নামকরণ করা হয় নিঝুম দ্বীপ। দ্বীপটির পূর্ব নাম বাউলার চর বা বালুয়ার চর। এই দ্বীপ মৎস্য আহরণ, সমুদ্র সৈকত, উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী, হরিন ও অতিথি পাখির জন্য বিখ্যাত।চিংড়ি মাছের প্রাচুর্যতার জন্য এটি ‘ইছামতির দ্বীপ’ নামেও পরিচিত ছিল্ তবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কাছে এ দ্বীপের মৌজার সরকারি নাম ‘ চর ওসমান’। এই দ্বীপের নামকরন হয় ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর। বাংলাদেশ সরকার নিঝুম দ্বীপকে ২০০১ সালে ‘ জাতীয় উদ্যান’ ঘোষনা করে।
৮) হাতিয়া
এটি নোয়াখালী জেলার দক্ষিনে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত একটি উপজেলা দ্বীপ।
৯) ভোলা
মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা হলো ভোলা।এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বীপ।দ্বীপটির পূর্বনাম দক্ষিণ শাহবাজপুর।এর আয়তন প্রায় ৩৪০৩ বর্গ কিঃমিঃ।‘কুইন আইল্যান্ড অব বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের দ্বীপের রানী’ খ্যাত এ জেলার সর্ব দক্ষিনের সাগর কোলের চরফ্যাশন উপজেলায় রয়েছে দেশের বৃহত্তম জ্যাকব ওয়াচ টাওয়ার। ১৮ তলা বিশিষ্ট ২১৫ ফুট উচ্চতার এই ওয়াচ টাওয়ার থেকে প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত তেঁতুলিয়া নদীর শান্ত জলধারা, মেঘনার উথাল-পাতাল ঢেউ, দক্ষিণে চরকুকরি-মুকরিসহ বঙ্গোপসাগরের একটা অংশ উপভোগ করা যাবে।
১০) মনপুরা দ্বীপ
ভোলা জেলার অর্ন্তগত মনপুরা দ্বীপে পর্তুগীজরা বাস করত।এর আয়তন ৩৭৩ বর্গ কিঃমিঃ।
১১) দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরোধপূর্ণ এই দ্বীপটি সাতক্ষীরা জেলার হাড়িয়াভাঙ্গা নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। দ্বীপটির আয়তন ৮ বর্গ কিঃমিঃ। দ্বীপটির অন্য নাম পূর্বাশা। ভারতে এটি ‘নিউমুর’ নামে পরিচিত। বর্তমানে এর অস্তিত্ব নেই। সমুদ্রসীমা রায়ে এটি ভারতে পড়ে। ভারতীয় নৌবাহিনী জোরপূর্বক ১৯৮১ সালে এটি দখল করেছিল।
১২ ) বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড
দ্বীপটি প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৯৯২ সালে।২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকে মৎস্য শিকারি মালেক ফরাজীসহ দু’জন জেলে প্রথম এ দ্বীপে বঙ্গবন্ধু দ্বীপ নামে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। এ দ্বীপে সর্বমোট নয় কিলোমিটার লম্বা সাগর সৈকত রয়েছে। এ সৈকতের পানি এতটাই স্বচ্ছ যে এখানে সহজেই ভয়হীনভাবে সাঁতার কাটা যায়। আয়তন প্রায় ৮ কি.মি.।
১৩) জালিয়ার দ্বীপ
কক্সবাজার জেলার টেকনাফে বাংলাদেশ-মায়নমার সীমান্তের নাফ নদীতে জেগে ওঠা দ্বীপে স্থানীয় নাম ‘জালিয়ার দ্বীপ’। এর আয়তন ২৭১.৯৩ একর বা ১.১ বর্গ কি.মি.। ‘নাফ ট্যুরিজম পার্ক’ পার্ক গড়ে উঠেছে েএই দ্বীপে।
১৪) স্বর্ণদ্বীপ
স্বর্ণদ্বীপের অপর নাম জাহাইজ্জার চর। এটি নোয়খালীর হাতিয়ায় অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ৩৭০ কি.মি.। ২০১৩ সালের ৮ মার্চ দ্বীপটিকে আধুনিক সামরিক প্রশিক্ষন কেন্দ্য হিসেবে গড়ে তুলতে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়।
- পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ।
- তারুয়া দ্বীপ ভোলায়।
- বাংলাদেশের বৃহত্তম ব-দ্বীপ সুন্দরবন।
- অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে গঠিত দ্বীপ সুন্দরবন।
- মৃতপ্রায় ব-দ্বীপ যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চল।
- সক্রিয় ব-দ্বীপ নোয়াখালীর দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর।
- বঙ্গোপসাগরে ড্যাম ক্রস পদ্ধতিতে চর জাগানো সম্ভব।
- চর বেশি যমুনা নদীতে।
- নোয়াখালির ঠেঙ্গার চরে রোহিংগাদের জন্য আবাসের ব্যবস্থা করা হবে।
- সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হবে নোয়াখালির স্বর্নদ্বীপে। এর পুরাতন নাম জাইজ্জার চর।
- চর পাটনি সুন্দরবনে
বাংলাদেশের চর
জেলা | বিখ্যাত চর |
ভোলা |
চর মানিক, চরফ্যাশন, চর জব্বর, চর নিউটন, চর কুকুড়ি মুকুড়ি, চর মিজান, চর জংলী, চর মনপুরা, চর জহির উদ্দিন, চর ফয়েজ উদ্দিন ইত্যাদি। |
ফেনী | মুহুরীর চর |
নোয়খালী | চর শ্রীজনি, চর শাহাবানী, ভাসান চর |
লক্ষীপুর | চর আলেজান্ডার, চর গজারিয়া |
চট্টগ্রাম | উড়ির চর |
রাজশাহী | নির্মল চর (ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ছোট একটুকরো জমি) |
দুলবার চর
সুন্দরবনের দক্ষিনে দুলবার চর অবস্থিত। মৎস্য আহোরণ, শুটকী মাছ এবং উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনীর জন্য বিখ্যাত।এর অপর নাম জাফর পয়েন্ট।
খালঃ গাবখান চ্যানেল ঝালকাঠি জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র কৃত্রিম খাল, যা বাংলার সুয়েজখাল নামে পরিচিত। ১৮ কি.মি. দীর্ঘ এ চ্যানেলটি ঝালকাঠির বিষখালী, সুগন্ধা নদীকে পিরোজপুরের কচা, সন্ধা নদীর সাথে যুক্ত করেছে।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট
হিরণ পয়েন্ট —– সুন্দরবনের দক্ষিনে
টাইগার পয়েন্ট —– সুন্দরবনের দক্ষিনে
জাফর পয়েন্ট —– সুন্দরবনের দক্ষিনে
এলিফেন্ট পয়েন্ট —– কক্সাবাজারে
জিরোপয়েন্ট —– গুলিস্থান, ঢাকা
বাংলাদেশের সমুদ্রসৈকত
সমুদ্র সৈকত অবস্থান দৈর্ঘ্য
কক্সবাজার কক্সবাজার ১২০ কিঃমিঃ
কুয়াকাটা পটুয়াখালী ১৮ কিঃমিঃ
ইনানী কক্সবাজার –
পতেঙ্গা চট্টগ্রাম –
বঙ্গোপসাগর
বাংলাদেশের উপকূলবর্তী বঙ্গোপসাগর ভারত মহাসাগরের অংশবিশেষ। বঙ্গোপসাগরের সর্ব্বোচ্চ গভীরতা ৪৬৯৪ মিটার বা ১৫৪০০ ফুট। সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড বঙ্গোপসাগরের একটি খাতের নাম এবং এর অন্য নাম ‘গঙ্গাখাত’। Ninety East Ridge বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত ৯০° পূর্ব দাঘ্রিমা রেখার সমান্তরালে একটি নিমজ্জিত পর্বতশ্রেনী। বঙ্গোসাগরে মোট দ্বীপ ২০৪ টি।