আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্য
সপ্তদশ শতকে সুদূর আরাকানে বাংলা সমৃদ্ধ সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছিল। আরাকনকে বাংলা সাহিত্যে ‘রোসাং’ বা ‘রোসাঙ্গ’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে। বার্মার উত্তর-পশ্চিম এবং চট্টগ্রামের দক্ষিনে সমুদ্রে তীরে এর অবস্থান। আরাকান অধিবাসীরা সাধারনভাবে ‘মগ’ নামে পরিচিত ছিলো। আরাকানে বিজাতীয় ও ভিন্ন ভাষাভাষীর রাজার অনুগ্রহ লাভ করে সপ্তদশ শতকে বঙ্গ ভাষাভাষী যে সকল প্রভাবশালী কবির আবির্ভাব ঘটেছিলো। তারা তাদের মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধি করেছেন। রাজসভার কবিদের মধ্যে ছিলেন – দৌলত কাজী, আলাওল, কোরেশী মাগন ঠাকুর, মরদন, আবদুল করীম খোন্দকার, শমশের আলী প্রমুখ। মরদনের বিখ্যাত্য কাব্যগ্রন্থ ‘নসীরানামা’।
দৌলত কাজী
আরাকান রাজসভার আদি কবি এবং প্রথম বাঙ্গালি কবি। তিনি লৌকিক কাহিনীর আদি রচয়িতা। তাঁর সবচেয়ে প্রসিদ্ধ কাব্যগ্রন্থ – ‘সতীময়না ও লোরচন্দ্রানী’।
কোরশী মাগন ঠাকুর
আনুমানিক ১৬০০ সালের দিকে কোরশী মাগন ঠাকুর চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি বিখ্যাত রাজসভা রোসাঙ্গ বা আরকানের কবি।তাঁর পিতা বড়াই ঠাকুর সেখনকার মন্ত্রী ছিলেন।তিনি আলাওলের ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের পৃষ্ঠপোষকতা করেন।এছাড়াও আলাওলের ‘সয়ফলমুলুক বদিউজ্জামাল’ কাব্যেরও পৃষ্ঠপোষক তিনি। তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘চন্দ্রাবতী’। তিনি ১৬৬০ সালে মারা যান।